Management

সোহেলি ইয়াছমিন

জনাবা সোহেলি ইয়াছমিন দেশের কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষার, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, নার্সিং ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রযুক্তি খাতের এক অনন্য নাম। এ খাতের নারী উদ্যোক্তা হিসেবে বলতে গেলে হাতে গোনা ২/১ জনের মধ্যে অন্যতম। সাইক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বের পাশাপাশি পালন করছেন বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান এবং সাংগঠনিক কর্মকান্ড।

জন্ম- ০১ এপ্রিল ১৯৮০
পিতার নাম- মোবারক আলী
মাতার নাম- হামিদা বেগম
জন্মস্থান- জামালপুর
বর্তমান ঠিকানা- বাড়ি-১২৭, রোড-৩, ব্লক- এ, সেকশন-১২, পল্লবী, ঢাকা
জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ৭৭৫৬০৪৪৬৮৬
পাসপোর্ট নং- বি ০০০৬১১১০, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ-০৮ সেপ্টেম্বর ২০৩১
মোবাইল নং- ০১৭১৫০১৬১৯৩
ইমেইল- [email protected]

জন্ম, বেড়ে ওঠা ও মানবসেবার অনুপ্রেরণা:
জামালপুর জেলার সদর থানার হাসিল গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তিনি মানবসেবার অনুপ্রেরণা পারিবারিকভাবে অর্জন করেন। পড়ালেখার সুবাদে নানাবাড়িতে থাকার ফলে খুব কাছ থেকে মানবসেবার প্রাথমিক অনুপ্রেরণা পান এখান থেকেই। তার নানা কমরেড নাসির উদ্দীন সরকার ছিলেন তৎকালীন বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা। খালা সুলতানা রাজিয়া ছিলেন তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম কর্মী। নানার বাড়িটি এখন গান্ধী আশ্রম ও মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সার্বিক তত্ত¡াবধানে রয়েছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন।

শিক্ষা জীবন:
গ্রামে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে বেশ কিছু প্রফেশনাল ডিগ্রি ও ট্রেনিং অন প্রকিউরমেন্ট এর ওপর বিশেষ কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেন। অংশ নিয়েছেন দেশে বিদেশে সরকারি-বেসরকারিসহ ইন্টারন্যাশনাল এনজিও ও দাতা সংস্থার আয়োজনে বিভিন্ন কর্মশালা ও সেমিনারেও।

কর্ম উদ্যোগ:
কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি সাইক গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁর সমৃদ্ধ ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাইক কলেজ অব মেডিকেল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত আনোয়ারা কলেজ অব বায়ো-সায়েন্স।

এছাড়াও প্রতিষ্ঠা করেছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল অধিভুক্ত সাতটি নার্সিং কলেজ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অধিভুক্ত ছয়টি আইএইচটি ও মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট (ম্যাটস্) ট্রেনিং স্কুল।

মেডিকেল এর পাশাপাশি তিনি কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে গড়ে তুলেছেন পাঁচটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট যা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন ৫টি জেলা শহরে সুসজ্জিত ও যুগ উপযোগী ৫টি প্রফেশনাল ট্রেনিং সেন্টার। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত এসব সেন্টার কর্মমুখী বিভিন্ন ট্রেডের ওপর স্বল্পমেয়াদী (৩৬০ ঘণ্টার বেসিক কোর্স-৩ মাস মেয়াদী) কোর্স পরিচালনা করা হয়ে থাকে। এই ট্রেনিং সেন্টার গুলোতে বছরে ২-৩ হাজার শিক্ষার্থীর ট্রেনিং করে। ট্রেনিং শেষে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।

তাঁর প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত টিচার্স ট্রেনিং কলেজ শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন মেয়াদী কোর্স পরিচালনা করে আসছে।

স্বাস্থ্য সেবা ও মানব কল্যাণের লক্ষ্যে বগুড়ায় ৭০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকায় দুইটি ডায়াগনস্টিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছেন।

জনশক্তি রপ্তানী গতিশীল করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন সাইক ওভারসীজ।

১৫,০০০ এর বেশী ছাত্র-ছাত্রী সাইক গ্রুপ মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে।

প্রায় ১১৫০ জন দক্ষ লোকবল (দাপ্তরিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) রয়েছে সকল দায়িত্ব পরিচালনার জন্য।

উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান সমূহ:

নেতৃত্ব:
শিক্ষাজীবনের প্রথম থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি সমাজের জন্য কিছু করার মানসিকতা পোষণ করতেন। যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোগের সাথে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ প্রাইভেট পলিটেকনিক উদ্যোক্তা অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদিকা হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রাইভেট নার্সিং কলেজ ওনার্স এসোসিয়েশনেরও। এছাড়াও সাইক এডুকেশনাল সোসাইটির ও রুমডো টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। আর শিক্ষা উদ্যোক্তা হিসেবে এবং এ খাতের একজন যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে শিক্ষাবিচিত্রা ও এডুকেশন ওয়াচ অ্যাওয়ার্ডসহ তিনি বেশ কিছু পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন।

অনুপ্রেরণা:
ভারতের উড়িষ্যার বিস্ময় বালক হিসেবে পরিচিত কিট ইউনিভিার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. উচিতা সামান্তার সাথে সেই ২০০০ সাল থেকে কাজ করার সুবাদে তার মাঝে অনুপ্রেরণা খুঁজে পান তিনি। কিছু কিছু কাজ হয়তো করতে পারেন নি কিন্তু সেই না হওয়া কাজগুলোই তাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়েছে আরও বহুদুর। আর সুযোগ পেলেই বেরিয়ে যান ভিনদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দেখতে। তিনি এ পর্যন্ত প্রায় ২০টি দেশ ভ্রমণ করেছেন।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা:
অদম্য ইচ্ছা, পরিশ্রম আর চেষ্টার মাধ্যমে একেবারে শুন্য থেকে এ পর্যায়ে আসা জনাবা সোহেলি ইয়াছমিন স্বপ্ন দেখেন তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো যেনো একটি মডেল হিসেবে গড়ে ওঠে। অন্যদের জন্য হয় অনুকরনীয়। তার জন্য তিনি তার জায়গা থেকে কাজ করে যাবেন। একইসময়ে সত্যিকারের অর্থে একটি প্রাইভেট নার্সিং ইউনিভার্সিটির তিনি স্বপ্ন দেখেন। আর সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে করতে চান বৃদ্ধাশ্রম, যেটিকে পরিণত করতে চান কষ্টে থাকা বয়স্ক মানুষের শেষ নির্ভরতার জায়গা। কাজ করতে চান ঝরে পড়া ও ছিন্নমুল শিশু ও তরুণদের জন্য সম্পুর্ণ ফ্রি লাগসই প্রশিক্ষণ।

সত্যিকারের সহযোগী:
বাংলাদেশের মতো দেশের বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে কারিগরি, নার্সিং ও মেডিকেল শিক্ষা প্রযুক্তির নানা বিষয়ে তুলনামূলক দরিদ্র ও নিন্মবিত্ত মানুষের সন্তানদের কম টাকায় মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ করে দেয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টায় তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন তার জীবনসঙ্গী জনাব আবু হাসনাত মো. ইয়াহিয়া এবং প্রায় সহস্রাধিক নিবেদিত কর্মী। যারা সময়ের পরিক্রমায় সাইক পরিবারের সত্যিকারের অংশ হয়ে গেছেন।

সাইক গ্রুপের লিংক-

Website: www.saicgroupbd.org

Facebook Page: www.facebook.com/saicgroup